নেতৃত্বের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গুণ: শ্রবণ

নেতৃত্ব, আত্মসচেতনতা ও ইচ্ছা, ব্যবসায়িক দক্ষতা, সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ক্ষমতা, যোগাযোগ দক্ষতা, প্রতিনিধিত্ব, প্রতিযোগিতা, সৃজনশীলতা, ভুত একজন নেতার গুণ। এগুলো সবই হচ্ছে একজন নেতার বৈশিষ্ট্য। নেতা নেতৃত্ব দিবে, সবাই তা মানার চেষ্টা করবে। সবাই তার পদক্ষেপে পা মিলিয়ে চলবে। এই নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তাই নেতার ওইসব গুণগুলো প্রয়োজন। তেমনই একটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে শ্রবণ।

নেতৃত্ব দিতে হলে যেমন নিজের বক্তব্য অন্যকে বলতে হয়, তেমনি অন্যের বক্তব্যও নিজেকে শুনতে হয়। অন্য কেউ কি বলছে, সেগুলোর গুরুত্ব কতটুকু, সেগুলো নিজের কোনো প্রয়োজনে আসবে কিনা প্রভৃতি বিষয়ে শ্রবণই হচ্ছে একমাত্র সহজ উপায়। আমরা ষদি শ্রবণকে শিল্পের সঙ্গে তুলনা করি, তাহলে বিষয়টির গভীরতা আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবো।

প্যাট উইলিয়ামসের লেখা প্রবন্ধ ‘হাউ টু বি লাইক কোচ উডেন’-এ কার্যকর শ্রাবণের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, “একজন ভালো নেতা হতে হলে, আপনাকে একজন ভালো শ্রোতা হতে হবে।সাফল্য পেতে হলে ‘না’ বলার চেয়ে, আপনাকে জিজ্ঞেস করতে হবে ‘কিভাবো’ ”

নিজের জ্ঞান দিয়ে অন্যের কথা শুনুন। গভীর মনযোগ দিয়ে শুনুন। কখনো এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে তা বের করে দেবেন না। কিছু শোনার ভান করা থেকে কিছু না শোনা অনেক ভালো।অবিচল শ্রবণ আপনাকে অবিচল উন্নতির পথে এগোতে সাহায্য করবে, আপনি নিজেকে একজন বৈশিষ্ট্পূর্ণ নেতা হিসেবে ভাবতে পারবেন, যখন আপনি অন্যের কথা শুনে তা থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবেন। তখন আপনি আরও সামনে এগোনোর সাহস খুঁজে পাবেন।কিন্তু এটি সবচেয়ে কঠিন একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায় যখন আপনি একটি উচ্চ পর্যায়ে আসীন হয়ে আছেন। কারণ, সেখান থেকে আপনি খুব সহজেই কারও কথা বন্ধ করে দিতে পারেন। আর শ্রবণ বন্ধ করা মানে নতুন কিছু শেখা থেকে নিজেকে বিরত রাখা। আর এতে করেই আপনি আপনার উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন।

নিজের বের করা পথে চললেই শুধু সাফল্য আসে না। বরং অন্য অনেকগুলো পথ থেকে একটি ভালো পথ বেছে নেয়াই হচ্ছে একজন প্রকৃত নেতার গুণ বা বৈশিষ্ট্য। এবং সেটি হতে পারে শ্রবণের মাধ্যমে। একজন নেতা হিসেবে আপনাকে তাদেরই নিয়োগ দিতে হবে, যারা আপনাকে কিছু বলার সাহস রাখতে পারে। যারা তাদের মতামত আপনাকে নির্ভয়ে বলতে পারে। আর এই ভয় কাটানোর দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।

তছাড়া কারও কথা শোনার আরও কিছু উপকারিতা আছে। ঘেমন, আপনি একজন নেতা মানেই যে আপনার সব কথা ঠিক, তা কিন্তু মোটেই না৷ আপনারও কিছু ভুল থাকতে পারে। আর এই ভুল গুলো হয়তো আপনি নিজে খুঁজে বের করতে পারবেন না। অন্যকেউ আপনাকে সেগুলো ধরিয়ে দিতে পারে। তাই তাদের কথা আপনাকে মনযোগ দিয়ে শুনতে হবে। নিজের ভুল গুলোকে সরিয়ে একজন উৎকৃষ্ট মানের নেতা তৈরি হতে সাহায্য করবে।

তবে মনে রাখবেন, কখনোই শোনার ভান করবেন না। কারণ এতে করে যেমন আপনার সময় অপচয় হবে, তেমনি অন্যদের কথাকে আপনি যথাযথ সন্মানও দিচ্ছেন না। এটি একজন নেতা হিসেবে আপনাকে কোনোভাবেই মানায় না।

নেতা হিসেবে সন্মান পেতে হলে অন্যকে অবশ্যই সম্মান করতে শিখতে হবে। আর তাদের কথা শোনাও এক প্রকার সম্মান দেয়া এতে করে তারাও

আপনাকে নেতার পদে খুব সহজেই মেনে নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top