ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদনপ্রক্রিয়া রোববার রাত ১০টার দিকে আবার শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত চাপে কারিগরি জটিলতা তৈরি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটায় অনলাইন আবেদনের এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছিল। এ পরিস্থিতির কারণে নষ্ট হওয়া তিন দিন সময় প্রয়োজনে বাড়িয়ে দেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান রাত পৌনে ১২টায় প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, রোববার রাত ১০টা থেকে থেকে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অনলাইনে (admission.eis.du.ac.bd-এই ঠিকানায়) প্রবেশ করে ভর্তির আবেদন করতে পারছেন। প্রথম পৌনে দুই ঘণ্টায় প্রায় চার হাজার নতুন আবেদন জমা পড়েছে।

৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনলাইন আবেদনপ্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। আবেদনপ্রক্রিয়ার শুরু থেকেই ওয়েবসাইটের কারিগরি সমস্যার কথা জানিয়ে আসছিলেন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের অনেকে। প্রথম ৪৮ ঘণ্টায় পাঁচ ইউনিটে মোট ১ লাখ সাড়ে ৫ হাজার আবেদন জমা পড়ে।

ওয়েবসাইটে একই সময়ে সাড়ে চার হাজারজনের প্রবেশ করার সুযোগ থাকলেও এর চেয়ে অনেক বেশি প্রার্থী প্রবেশের চেষ্টা করায় তখন কারিগরি জটিলতা তৈরি হয়।

এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে অনলাইন আবেদনের প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়। আগের একটি সার্ভারের সঙ্গে আরও দুটি নতুন সার্ভার স্থাপন করে রোববার রাত থেকে আবারও আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। এখন একই সময়ে অন্তত ১১ হাজার শিক্ষার্থী ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করতে পারছেন বলে জানালেন অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক আরও বললেন, ‘এর আগে ৩০ মার্চ পর্যন্ত আবেদনের সময় নির্ধারিত ছিল, টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ১ এপ্রিল। কারিগরি জটিলতার কারণে নষ্ট হওয়া তিন দিন সময় প্রয়োজন হলে এপ্রিল মাসের সঙ্গে সমন্বয় করে ভর্তির অনলাইন আবেদন ও তার ফি জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হবে।’

আগামী ২১ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ক ইউনিট, ২২ মে কলা অনুষদভুক্ত খ ইউনিট, ২৭ মে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত গ ইউনিট, ২৮ মে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ ইউনিট ও ৫ জুন চারুকলা অনুষদভুক্ত চ ইউনিটের বহুনির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। চ ইউনিটের অঙ্কন পরীক্ষা হবে ১৯ জুন। প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা ইত্যাদি ব্যবহার করে এবার ভর্তি-আবেদনের নির্ধারিত ফি জমা দেওয়া যাবে।

ক, খ, গ ও ঘ ইউনিটে মোট ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা হবে। এ ক্ষেত্রে ৬০ নম্বরের বহুনির্বাচনী ও ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। উত্তর দেওয়ার জন্য ৪৫ মিনিট করে সময় থাকবে। চ ইউনিটে ৪০ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষা হবে। সময় ৩০ মিনিট। এর ফলাফলের ভিত্তিতে পরে মেধাক্রম অনুযায়ী ১ হাজার ৫০০ জন ৬০ নম্বরের অঙ্কন পরীক্ষায় অংশ নেবেন। অঙ্কন পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। পাঁচটি ইউনিটেই প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর ওপর ১০ করে মোট ২০ নম্বর যোগ করে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে।

ক ইউনিটে আবেদন করতে হলে এসএসসি ও এইচএসসিতে আলাদাভাবে ন্যূনতম জিপিএ–৩.৫ সহ মোট ৮.৫; খ ইউনিটে আলাদাভাবে জিপিএ–৩ সহ মোট ৮; গ ইউনিটে আলাদাভাবে জিপিএ–৩.৫-সহ মোট ৮ থাকতে হবে। বিভাগ পরিবর্তনের ঘ ইউনিটে নিজ নিজ ইউনিটে যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে আবেদন করা যাবে। এ ছাড়া চ ইউনিটে আবেদন করতে হলে এসএসসি ও এইচএসসিতে আলাদাভাবে জিপিএ–৩-সহ মোট ৭ থাকতে হবে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে। পাঁচটি ইউনিটেই আবেদন ফি এবার ৬৫০ টাকা। এ বিষয়ে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘বিভাগীয় পর্যায়ের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে। সেখানে আমাদের প্রতিনিধিও যাবেন। আসনবিন্যাসের সিদ্ধান্তটি তাঁরা সম্মিলিতভাবেই নেবেন।

আবেদনের সময় শিক্ষার্থীরা পছন্দ অনুযায়ী কেন্দ্র নির্বাচন করতে পারবেন। তবে আবেদনকারীদের আমরা নিজ নিজ শহরকে কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিতে চাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top