নিজের দর্শন ক্ষমতা বাড়ান !

‘দর্শন’ কথাটি শুনলেই মনে হতে পারে খুব জটিল কিছু হয়তো। কারণ যারা দর্শন নিয়ে কাজ করে, তাদের আমরা দার্শনিক বলে থাকি। কিন্তু আপনি জানেন কি, প্রতিটি মানুষকেই এই দর্শনের পথ ধরেই জীবনে চলতে হয়? সহজ করে বলি। এই যে আমরা চলছি, ফিরছি, কাজ করছি, প্রতিটি কর্মকান্ডের পেছনেই রয়েছে আমাদের পরিকল্পনা। আর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমরা কত কিছুই না করি। কত চিন্তা আর শ্রম দিয়ে দেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে। এই যে পরিকল্পুনা, কিভাবে কোনো কিছু করা যায়, কেন করবো, কবে করবো এসব নিয়ে ভাবাটাই কিন্তু দর্শনের আওতায় পড়ে। সুতরাং, আমরা প্রত্যেকেই কিন্তু একেকজন দার্শনিকই বটে। কিন্তু এই দর্শন ক্ষমতা সবার এক নয়। না থাকাটাই স্বাভাবিক। সবাই সবকিছুতে পারদর্শী নয়। কেউ হয়তো জীবনে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারে খুব সহজেই। কেউ আবার সিদ্ধান্ত গ্রহণে কিছুটা কম পারদর্শী। কিন্তু একটি সঠিক পরিকল্পনাই জীবনে এনে দিতে পারে আমুল পরিবর্তন। তাই আজ আপনাদের জন্য রয়েছে বেশকিছু উপকারী তথ্য, যা আপনার দর্শন ক্ষমতা বাড়াতে খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

১। দিক নির্দেশনা চিহ্নিত করুন

সমুদ্রে ষখন জাহাজ ভাসে তখন ষদি সেটিকে কেউ নিয়ন্ত্রন না করে, তাহলে বাতাস সেটিকে কোথায় নিয়ে যাবে কেউ জানে না। মানুষের জীবনও সেই জাহাজের মত। সঠিক নিয়ন্ত্রন বা নির্দেশনা না থাকলে জীবন সুশৃঙ্খলভাবে চলবে না। এই নির্দেশনাই হচ্ছে আপনি কিভাবে ভাবছেন আর কতটুকু ভাবছেন। কোন পথে গেলে জীবন সুন্দরভাবে চলবে, সেটি নিয়ে চলতে হবে। তার মানে হল, আপনার জীবন জাহাজের পাল আর স্টিয়ারিং আপনার হাতে। কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে কিভাবে চালনা করবেন তা খুব ভেবেচিন্তে বের করতে হবে।

২। নিয়মানুবর্তী হোন

যেকোনো কাজে নিয়মানুবর্তী হওয়া খুবই প্রয়োজন। কোনো কাজই শৃঙ্খলা নিয়ে না করলে তা শেষ করা যায় না। সফল মানুষ হতে চাইলে তাই নিয়মানুবর্তী হোন।

৩। সাফল্য বা ব্যর্থতা থেকে শেখার চেষ্টা করুন

প্রতিটি মুহূর্তেই কিছু না কিছু শেখার আছে। যখন কোনো কাজে সফলতা পাবেন, তখন সেই সফলতার পেছনের কারণগুলো খুঁজে বের করুন। যাতে করে পরবর্তী যেকোনো কাজে সেগুলোর প্রয়োগ করতে পারেন। ঠিক সেভাবেই, যেকোনো ব্যর্থতা থেকেও রয়েছে অনেক কিছু শেখার। যেই বিষয়গুলোর জন্য ব্যর্থ হয়েছেন, সেগুলো বের করুন। আর চেষ্টা করুন যাতে করে পরবর্তী কাজে সেগুলোর সফল প্রয়োগ করতে পারেন।

৪। পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বাড়ান

আশেপাশে কি ঘটছে, কেন ঘটছে, বা কি ঘটতে যাচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার চারপাশের মানুষকে বোঝার চেষ্টা করুন। কারণ, আপনার পরিকল্পনায় তারাও বেশ বড় ভূমিকা নিয়ে উপস্থিত হতে পারে। তাই নিজের পর্যবেক্ষণ শক্তি বাড়ান। এটি আপনাকে আগাম পরিস্থিতি বোঝার জন্য সাহায্য করবে।

৫। বই পড়ুন

স্বন্ন মূল্যে এবং কম শ্রমে ঘদি খুব ভালো কোনো পরামর্শ চেয়ে থাকেন, তাহলে সেটি একমাত্র দিতে পারে বই। বিভিন্ন ধরণের বই পড়তে পারেন। দর্শন শিখার জন্য যে কেবল দার্শনিক মতাদর্শের বই পড়বেন, তা কিন্তু না। যেকোনো বই আপনার চিন্তার জগৎকে বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। আপনার চিন্তাধারায় ত উৎকর্ষ সাধন ঘটবে, ততই আপনার মন দার্শনিক হয়ে উঠবে।

৬। নিজের চিন্তা ভাবনাগুলো লিখে রাখুন

ডায়েরী লিখার চেষ্টা করুন। সেখানে প্রতিদিনকার কর্মকান্ডের ছোট কিছু বিবরণ দিয়ে নিজের মতামত লিখে রাখুন। কোন কোন জিনিসগুলো আপনার কাছে ইতিবাচক বা নেতিবাচক মনে হয়েছে তা লিখুন। ডায়েরীতে আপনার ভবিষ্যত কর্মপন্থার কিছু দিক সম্পর্কেও লিখে রাখার চেষ্টা করুন। কি করলে ভাল হবে, আর কি করলে খারাপ হবে তা লিখুন। এভাবেই আপনি আপনি আপনার দর্শন ক্ষমতা বেশ খানিকটা বাড়াতে পারবেন।

৭। কোনোকিছুকেই উপেক্ষা করবেন না

আপনার জীবনে টুকরো টুকরো অনেক ঘটনাই থাকতে পারে। খুব ছোট কোনো ঘটনাই হয়তো বড় কোনো ফলাফল গড়ে দিতে পারে। তাই ছোট বলে কখনোই কোনো ঘটনা বা কাজকে উপেক্ষা করা একেবারেই উচিৎ নয়। এসব ঘটনা থেকে অনেক কিছুই শেখার থাকে। ঘা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বাড়াতে সাহায্য করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top