আপনার সেরা প্রেজেন্টেশন! ভালো উপস্থাপনা দেয়ার কিছু কৌশল

আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি কিংবা অফিসে কাজ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো প্রোজেক্ট জমা দিতে কিংবা  থিসিস অথবা অফিসের বড় কোন কাজ সবকিছুতেই প্রেজেন্টেশন দিতে হয়। আর এই সময় নার্ভাস হয় না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। খুব ভাল কাজ করা এবং ভাল প্রেজেন্টেশান বানানোর পড়ে ও দেখা ঘায় শুধুমাত্র উপস্থাপনের জন্য পুরো কাজটির বারোটা বেজে যায়। আজকে আমরা কিভাবে একটি সুন্দর প্রেজেন্টেশন দেওয়া যায় সেটা নিয়ে কথা বলব!

| প্রস্ততি গ্রহন: যে বিষয় নিয়ে আপনি প্রেজেন্টেশান দিবেন সেই বিষয় নিয়ে খুব ভালভাবে পরাশুনা করুন। বিষয়টির স্পষ্ট ধারণা থাকা খুব জরুরি। বিভিন্ন নোট সংগ্রহ করুন। এরপর প্রেজেন্টেশান তৈরি করুন। প্রথমে সাজিয়ে নিন কিভাবে বলবেন এবং কোন পয়েন্ট আগে দিবেন। সেই অনুযায়ী তৈরি করুন।

২। অতিরিক্ত কথা পরিহার করুন: প্রেজেন্টেশানে যত সম্ভব কম পয়েন্ট ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত এবং অপ্রয়োজনীয় কথা পরিহার করবেন। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নির্বাচন করে সেগুলো লিখুন। কারন অপ্রয়োজনীয় কথায় শ্রোতা বিরক্ত হয় এবং আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। লেখার পরিবর্তে ছবি ও গ্রাফ দিতে পারেন।

৩। সিম্পল রাখুন: আপনার প্রেজেন্টেশান সিম্পল রাখার চেষ্টা করুন। এবং পরিবেশ, দর্শক এবং বিষয় বুঝে আপনার প্রেজেন্টেশান স্লাইড তৈরি করুন। যদি ছোটদের জন্য স্লাইড বানান তাতে একটু রঙ, ছবি বেশি রাখুন। আবার অফিস বা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তৈরি হবে আলাদা ভাবে। খুব বেশি কিছু স্লাইড এ লিখবেন না। এবং সব তথ্য স্লাইডে দিবেন না। শুধু মূল পয়েন্ট লিখবেন। এমন যেন না হয় যে আপনি স্লাইড দেখেই সব কথা বলছেন। রঙ এবং ছৰি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকুন। মোটকথা আপনার প্রেজেন্টেশানের মুল উদ্দেশ্য যেন বুঝতে পারে সবাই সেটা খেয়াল রাখুন।

৪। আপনার দর্শকদের নিয়ে ভাবুন: আমরা অনেকেই এই কাজটি ভাবিনা। দর্শকদের নিয়ে ভেবে প্রেজেন্টেশান তৈরি করুন। তাঁদের পছন্দ, অপছন্দ, কি বললে তাদের মনোযোগ রাখা যাবে এসব নিয়ে ভেবে প্রেজেন্টেশান তৈরি করুন। কারন দর্শক আগ্রহ হারিয়ে ফেললে আপনার কষ্ট বৃথা যাবে।

| হাসি মুখে কথা বলুন এবং চোখের দৃষ্টি দর্শকের উপর রাখুন: গোমড়া মুখে কথা বললে সেই কথা শুনতে কার ভাল লাগে; প্রেজেন্টেশানেও হাসি মুখে কথা বলুন। দর্শকের চোখের দিকে তাকাবেন। যতটা সম্ভব স্লাইড না দেখে কথা বলবেন।

৬। শারীরিক অঙ্গভঙ্গি: আপনার শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ষেন ঠিক থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। হাত নাড়িয়ে এবং হালকা হেঁটে আপনার বক্তৃতা দিতে পারেন। তবে তা যেন দৃষ্টিকটু না হয়ে সেটা খেয়াল রাখবেন।

৭। শুরুটা করুন অন্যভাবে: আপনি যদি শুরুটা একদম গতানুগতিকভাবে শুরু করেন যেমন – “আমি আজকে এই নিয়ে কথা বলব অথবা আমার প্রেজেন্টেশানের বিষয় এটা” এভাবে বললে দর্শক আপনার কথায় অতটা প্রভাবিত হবেনা। কেউ আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। তাই শুরুতা করুন অন্নভাবে। আপনার বিষয়ের উপর এ ছোট একটা গল্প কিংবা ঘটনা কিংবা কোন উক্তি দিয়ে শুরু করুন। দর্শক আগ্রহ পাবে।

| প্রশ্ন করুন: আপনি যদি দর্শকদের সুযোগ দেন কথা বলার তবে প্রেজেন্টেশানটি আরও প্রানবন্ত হয়ে উঠে। সবাই আগ্রহ নিয়ে কথা শুনে এবং বুঝার চেষ্টা করে। তাই প্রেজেন্টেশনকে মজার করে তুলতে আপনার শ্রোতাদের প্রশ্ন করুন। তাদের অভিমত নিন।

৯। অনুশীলন: সরাসরি ঘদি স্টেজে যেয়ে কথা বলতে যান তবে সেটা খুব ভাল হয় না। তাই প্রেজেন্টেশান দেওয়ার আগে কয়েকবার অনুশীলন করুন। দরকার হলে কাউকে ডেকে নিয়ে আপনার কথা শোনান। তার অভিমত নিন। কয়েকবার করলে কথা বলা সহজ হবে।

১০। রিলাক্স থাকুন: আপনি রিলাক্সভাবে কথা বলুন। বেশি চাপ নিবেন না। কথা বলবেন অবশ্যই পরিষ্কার গলায় এবং স্পন্টভাবে। ভয় পাবেন না। নিজের উপর ভরসা রেখে কথা বলুন।

এই বেপারগুলো নিয়ে একটু সচেতন হলেই খুব সুন্দরভাবে প্রেজেন্টেশান দেওয়া যায়। এবং ভাল ফল পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top