পরীক্ষায় কিভাবে আরও ভালো করবেন !

একজন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় ভাল করতে হলে কি করতে হবে? এই প্রশ্নের উত্তর সবাই দিবে যে ভালভাবে পড়তে হবে। কিন্তু আসলেও কি শুধু ভাল করে পড়লেই পরীক্ষায় খুব ভাল নাম্বার পাওয়া যায়?

অনেক সময় দেখা যায় একসাথে পড়ে একরকম ভাবে পড়েও কেউ ৮০ পায়, কেউ পায় ৯০। এর কারন কি হতে পারে? এর কারন হল পরীক্ষায় শুধু পড়লেই চলে না। পরীক্ষার খাতায় সেটা তুলেও ধরতে হয়। কারন পরীক্ষার খাতা দ্বারাই মেধার মূল্যায়ন হয়। আর তাই পরীক্ষায় ভাল ফল করতে হলে কিছু পদ্ধতি মনে রাখতে হবে। আমরা এখানে একজন পরীক্ষার্থীর কিভাবে খাতায় লেখা উচিত তাই নিয়ে কথা বলব।

পুরনো প্রশ্ন দেখুন

আগের প্রশ্নগুলো দেখুন এবং ধারনা নিন। কি ধরনের প্রশ্ন আসে এবং কত নাম্বার থাকে। কোন ধরনের প্রশ্ন বেশি আসে এসব ভাল করে খেয়াল করুন এবং সেই অনুযায়ী আপনার পরীক্ষার প্রস্ততি নিন। সময়ের ব্যাপারটি খেয়াল করুন। মোটকথা পুরনো প্রশ্ন থেকে ভাল করে ধারনা নিয়ে নিন কি ধরনের প্রশ্ন আসে পরীক্ষায়।

পরিকল্পনা করুন

মনে রাখবেন পরীক্ষার খাতা দিয়েই আপনার মেধার মুল্যায়ন হবে।তাই খাতাকে অবশ্যই সুন্দর এবং সাবলীল ভাবে সাজাতে হবে। পরীক্ষার খাতায় লিখার পূর্বেই প্রশ্নর্টি ভালভাবে পরে নিয়ে পরিকল্পনা করে নিন কিভাবে লিখবেন।কোন ধরনের প্রশ্ন আগে লিখবেন, ছোট প্রশ্ন না বড় প্রশ্ন, আগে অঙ্ক করবেন নাকি আগে ছবি আঁকবেন এসব আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন একইভাবে কিভাবে কোন প্রশ্ন লিখবেন এটা নোট করে রাখুন প্রয়োজনানুসারে।

সময়কে সাজান

পরীক্ষায় ভাল করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট এটি। পরীক্ষার আগেই সময় নিয়ে ভাল করে পরিকল্পনা করা উচিত। যেমন সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার ক্ষেত্রে ক.খ,গ-ঘ চারটি প্রশ্নের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করুন এবং চেষ্টা করুন কোনোমতেই যেন তার বেশি সময় না লাগে। এভাবে প্রতিটি প্রশ্নের জন্য সময় নির্ধারণ করে দিন এবং বাসাতে আগে থেকেই সেই পদ্ধতি চর্চা করুন। তাহলে পরীক্ষায় কোন প্রশ্ন ছেড়ে আসা লাগবেনা সময় নিয়ে পরিকল্পনার অভাবে।

প্রশ্ন ভাল করে পড়ন

অনেক ছাত্রছাত্রী ঘে ভূল করে সেটা হল প্রশ্ন ভাল করে পড়েনা। শুধু প্রশ্ন না প্রশ্নের সাথে অনেক নির্দেশ থাকে সেগুলো দেখেনা বা দ্রুততার জন্যে খেয়াল করে না । এজন্য অনেক বড় ভুল হয়ে যায় অনেক সময়। তাই প্রশ্ন পাওয়ার পর প্রথমেই সম্পূর্ণ প্রশ্নটি খুব ভাল ভাবে পড়ুন। কোথায় থেকে কয়টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে কত নাম্বারের প্রশ্ন এবং প্রশ্ন কি ইত্যাদি বিষয়গুলো খুব ভাল করে পড়ুন। এরপর উত্তর লেখা শুরু করুন।

খাতার দিকে নজর দিন

পরীক্ষার খাতায় আপনার লিখাকে অবশ্যই সুন্দর এবং মার্জিত করতে হবে। ঠিকমত মার্জিন টানবেন, কালো সাইনপেন অথবা পেন্সিল দিয়ে মার্জিন টানতে পারেন। মূল পয়েন্টগুলো, প্রশ্নের নাম্বার, রচনা অথবা সংজ্ঞার ইত্যাদি নীল অথবা বেগুনি রঙের কলম দিয়ে লিখবেন। লেখা যেন পরিষ্কার হয় এবং বানান এবং ব্যাকরণগত ভুল পরিহার করবেন। কাটাকাটি বেশি না হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। কাটতে হলে সেটা ঠিকমত কেটে লেখা শুরু করবেন। ছবি আঁকার ক্ষেত্রে অবশ্যই ছবি যেন পরিষ্কার থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ভাল করে ছবিতে নামকরণ করবেন পেন্সিল দিয়ে এবং গাড় পেন্সিল ব্যবহার করবেন নামকরণের ক্ষেত্রে যেন নাম পরিষ্কার ভাবে পড়া যায়।

অযথা উত্তর বড় করবেননা

পরীক্ষায় প্রশ্নের নাম্বার অনুযায়ী উত্তর করবেন। অযথা বড় করবেন না, এবং বাড়তি কথা না লিখে মূল কথা লিখুন। পয়েন্ট আকারে উত্তর দেওয়ার হলে পয়েন্ট আকারে দিন। সংজ্ঞা দিলে উদাহরণ দিবেন। লেখার মান বজায় রাখুন। সময় কম থাকলে মূল ভাব লিখে দিবেন। কিন্তু চেষ্টা করবেন প্রশ্ন না ছেড়ে আসার। অবশ্যই রিভিশন দিন, অনেকেই পরীক্ষার হলে রিভিশন দেয়না। এই কাজটি করা উচিত নয়। অবশ্যই একবার হলেও রিভিশন দিতে হবে। এবং দেখতে হবে কোথাও কিছু ভুল হল কিনা সেজন্যে পুরো খাতা একবার হলেও ভাল করে দেখতে হবে।

পরীক্ষার হলে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন মাথা ঠাণ্ডা রেখে ভয় না পেয়ে ঠিকমত উত্তর দেয়া । অনেক সময় প্রশ্ন সব না পারলেও যা পারবেন তা আগে ভালভাবে উত্তর করে এরপর বাকি প্রশ্ন উত্তর দিবেন। একটু গুছিয়ে এবং পরিকল্পনা করে কাজ করলে পরীক্ষায় অনেক ভাল নাম্বার পাওয়া সম্ভব!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top