করোনায় পেশাগত কাজে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি

করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের কর্মস্থলে স্বাভাবিক অবস্থা নেই। পেশাজীবনে পরিবর্তন এসেছে। বাড়ি থেকেই কাজ চলছে, বাড়ি থেকেই মিটিং-ইন্টারভিউ চলছে। অনেকেই এই সময়ে চাকরি ও পেশা পরিবর্তনের জন্য ইন্টারভিউ দিচ্ছেন বাড়ি থেকেই অনলাইনে। অনলাইনে সাক্ষাৎকার বা বৈঠক আমাদের অনেকের জন্যই বেশ নতুন একটি বিষয়। অনেকেই এই নতুন বিষয়ের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। একটু সচেতন থাকলেই অনলাইনে সাক্ষাৎকার কিংবা বৈঠকে আমরা নিজেদের উপস্থিতি এবং নিজেদের ব্যক্তিত্ব ইতিবাচকভাবেই প্রকাশ করতে কিছু কৌশল কাজে লাগাতে পারি। 

শুরু করতে হবে উপস্থাপনা দিয়ে

আমরা নিজেকে সব সময় সব মাধ্যমে উপস্থাপনের চেষ্টা করি। যেহেতু অনলাইন সাক্ষাৎকার ও বৈঠক কোন না কোন পেশা সংশ্লিষ্ট বা চাকরি সম্পৃক্ত, তাই এ ক্ষেত্রে নিজেকে উপস্থাপন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পোশাক আমরা কতটা আত্মবিশ্বাসী, তা প্রকাশ করে। তাই বাড়িতে যে পোশাক পরুন না কেন, অনলাইন সাক্ষাৎকার ও বৈঠকের জন্য আপনার পেশার সঙ্গে মানানসই ও সাবলীল—এমন পোশাক পরতে চেষ্টা করুন। এমনকি ঘরের পোশাক ও কাজের পোশাক একসঙ্গে মিলিয়ে অর্ধেক বা নতুন কোনো পোশাক আবিষ্কারের চেষ্টা না করাই ভালো। চেষ্টা করুন পরিপূর্ণ পোশাক পরে অনলাইন বৈঠক ও সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে। অলংকার ও চশমা পরলে, তা যেন আপনার ভাষা প্রকাশ করে, সেদিকে খেয়াল করুন। বাহুল্যতা পরিহার করুন। স্বাভাবিক ও সাধারণ মার্জিত পোশাক-পরিচ্ছেদে নজর দিন।

অবাচনিক যোগাযোগের দিকে খেয়াল করুন

অনলাইনে কথা বলার সময় পরিস্থিতি বুঝে মুখের অভিব্যক্তি ঠিক রাখনু। স্বাভাবিক থাকুন। পরিচ্ছন্ন হাসি রাখুন মুখে। পরিস্থিতি বুঝে নিজেকে উপস্থাপন করুন। নিজের মাথার অবস্থান ও শরীরে অবস্থান চেয়ারের সঙ্গে সমন্বয় করে শরীর শিথিল করে বসার চেষ্টা করুন। নিজের অবাচনিক যোগাযোগ দক্ষতার দিকে গুরুত্ব দিন। শরীরের ভাষা উপস্থাপন ও বোঝার দিকে খেয়াল করুন। 

পেশাদারত্ব বজায় রাখুন

অনলাইন সাক্ষাৎকার ও বৈঠকে বাড়ি থেকে অংশগ্রহণের সময় নিজের অবস্থান ও পেশাদারত্ব বজায় রাখুন। যেখান থেকে সংযুক্ত হচ্ছেন, তার অবস্থান ও পরিবেশ সহজ ও সরল রাখার চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করুন। একটানা অনেকক্ষণ মিটিং চললে সময় বুঝে অনুমতি নিয়ে মিনিট পাঁচেক হাঁটাচলায় মনোযোগ দিন। অনেকক্ষণ একইভাবে বসে থাকলে ঘাড় ব্যথা বা শরীরে ব্যথা হতে পারে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন। হাঁচি–কাশির আদবকেতা মেনে চলুন। পরিবারের সদস্যদের মিটিং চলাকালীন উচ্চ স্বরে কথা বলা বা জোরে কথা না বলতে অনুরোধ করুন। অফিসের যেকোনো কাজে ডায়েরি নিয়ে মিটিং শুরু করুন। প্রয়োজনীয় নোট নিন। যতক্ষণ সময় সংযুক্ত থাকবেন সক্রিয় থাকুন। 

কথার ক্ষেত্রে যা খেয়াল রাখবেন

স্বাভাবিক পরিস্থিতির মতোই মিটিং বা সাক্ষাৎকারের শুরুতে সালাম বা সময় বুঝে সম্ভাষণে নজর দিন। কোনো বৈঠকে একের অধিক ব্যক্তি থাকলে, যার সঙ্গে কথা বলছেন, তার সঠিক পরিচয় ও অবস্থান বুঝে নাম ধরে কথা বলুন। কোনো প্রশ্ন থাকলে জিজ্ঞেস করুন ছোট করে। ইন্টারনেট সমস্যার জন্য কথা না বুঝলে দুঃখ প্রকাশ করে উত্তর দিন। 

আর যা সাধারণ বিষয় গুরুত্বপূর্ণ

ইন্টারনেট সংযোগ ঠিক আছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে। বিদ্যুৎবিভ্রাট হলে মিটিং আয়োজনকারীকে মুঠোফোনে সমস্যার কথা জানান। প্রযুক্তির সাধারণ বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন। কখন ক্যামেরা বন্ধ করবেন, কখন মাউথস্পিকার বন্ধ রাখবেন, তা খেয়াল করুন। 

সূত্র: প্রভাষক, অডিওলোজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাংগুয়েজ প্যাথোলজি বিভাগ, পাইজার, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top