কিছুদিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে একাদশ শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা। কোভিড – ১৯ এর জন্য সব কলেজে এই ভর্তি অনুষ্ঠিত হচ্ছে অনলাইনে। কোন কলেজটি নিজের জন্য উপযুক্ত হবে তা নিয়ে সবসময়ই শঙ্কিত থাকে শিক্ষার্থীরা।
ভালো কলেজে ভর্তি হলেই ভালো ফল করা যায় বলেই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের ধারণা। তাই যে করেই হোক নামিদামি কলেজেই ভর্তি হতে হবে। এটি একটি ভুল ধারণা। ২০১৫ সালে ঢাকা বোর্ডের ঢাকা কমার্স কলেজে ১৩ জন, ঢাকা সিটি কলেজে ১২ জন, আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে ২২ জন, ঢাকা কলেজে ১৬ জন, নটরডেম কলেজে ২১জন, ভিকারুননেসা নূন কলেজে ৯ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বোর্ডের চট্টগ্রাম কলেজে ১৫০ জন, সরকারি হাজী মোঃ মহসীন কলেজে ৮৯ জন, সরকারি কমার্স কলেজে ২১ জন, নৌ-বাহিনী স্কুল এন্ড কজলেজে ১৩ জন, চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ১৭৯ জন, বিএএফ শাহীন কলেজে ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজে ৪৩ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়।
স্বনামধন্য কলেজগুলোতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়, তবু কেন তারা অকৃতকার্য হবে? অথচ এমন অনেক কলেজ রয়েছে যেগুলোতে কেউ অকৃতকার্য হয়নি। যেমন ২০১৫ সালে ঢাকা বোর্ডের শামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ, কাদের মোল্লা কলেজ, ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ এর সবাই কৃতকার্য হয়েছে। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বোর্ডের বন্দর কতৃপক্ষ স্কুল এন্ড কলেজ, বন্দর কতৃপক্ষ বালিকা স্কুল এন্ড কলেজ এর সবাই কৃতকার্য হয়েছে। অনেক কলেজে এসএসসিতে যে এ+ পেয়েছিল, এইচএসসিতে সে এ+ পায়নি। আবার উল্টো ঘটনাও অনেক প্রতিষ্ঠানে ঘটেছে। উদাহরনস্বরুপ বলা যায়, ক্যামব্রিয়ান থেকে ২০১৫ সালে বের হওয়া শিক্ষার্থীর ৭০ শতাংশ জিপিএ-৫ পেয়েছে, অথচ ভর্তির সময় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ছিল মাত্র ৩০ শতাংশ। ফলে এসব বিষয়ও ভালো কলেজ নির্ধারণে বিবেচনায় নেয়া উচিত।
শিক্ষাবিদদের মতে, শিক্ষার্থীদের কলেজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কাছের কলেজটিকে পছন্দের তালিকায় রাখা উচিত। শিক্ষার্থীরা তার নিজ এলাকার ভালো কলেজে ভর্তির হলে তাদের অতিরিক্ত সময় নষ্ট হবে না। যাতায়াতে যে সময় নষ্ট হবে সেই সময়টাতে পড়াশোনায় মন দিলে নিশ্চিতভাবে ফলাফল ভালো হবে। এছাড়া বিভিন্ন কলেজের অতীতের ফলাফল বিশ্লেষণ করতে হবে। শুধু নামে নয় মানের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
বড় কলেজে ভর্তির সংকট ছিল, থাকবে। রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলোসহ সারাদেশে জেলা পর্যায়ে ভালো কলেজের সংখ্যা তুলনামূলক কম। তবে ভালো কলেজে ভর্তি হলেই ভালো রেজাল্ট করবে এমন গ্যারান্টি নেই। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে সাফল্য আসবেই। শুধু পাঠ্যপুস্তকের পড়াশোনার মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান শ্রেষ্ঠ হতে পারে না। অনেক প্রতিষ্ঠানে শোনা যায়, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট ও কোচিংয়ে না পড়লে কম নম্বর দেয়া হয়। কোনো ক্লাসে শিক্ষার্থীরা কম নম্বর পেলে ওই বিষয়ের শিক্ষকের বিভিন্ন সুযোগ বন্ধ রাখা হয়।
ভর্তির জন্য ভালো কলেজ হবে সেটি যেখানে খেলার মাঠ থেকে শুরু করে সব সুযোগ সুবিধা আছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে। অনেক শিক্ষার্থী দূরের কলেজে ভর্তি হয়ে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি মানসিক ও শারীরিক চাপে থাকেন। তাই এ বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত। নিজ বাসা থেকে এমন কলেজে ভর্তি হওয়া ঠিক হবে না, যেখানে আসতে যেতেই পুরো সময় পার হয়ে যায়। এ ছাড়া নিজের অর্জন করা জিপিএও বিবেচনায় আনতে হবে।
তথ্য সংগ্রহঃ http://campus.org.bd/online/single.php?ID=1056